Saturday, July 28, 2012

এডমন্টনে ঝরছে বাদল

এডমন্টনে ঝরছে বাদল
তুখোড় ধারার বৃষ্টি
মনের পাখি খুঁজছে সতেজ
কদম ফুলের দৃষ্টি।।

মেঘবতী মেঘের কন্যা
কার টানেতে ছুটছে
বজ্র-আলোয় রূপের ঝলক
স্মৃতির বারুদ ফুটছে
বুক-হৃদয়ে প্রেমবিদ্যুৎ
বাড়ছে অনাসৃষ্টি।।

ভাসছে স্মৃতি দূর অতীতে
যখন ছিলে কাছে
আকাশ-পাখি যুগলবন্দী
হিজল তমাল পাশে
বুনোফুলে বাঁধা খোঁপার
দস্যি মেয়ে মিষ্টি।।

এই প্রবাসে কদমও নেই
হিজলও নেই ধারে
বৃষ্টি এলেই দিচ্ছে উঁকি
ভাবনা বারে বারে
সুখের ছবি চোখের মাঝে
কাব্য-কথা-কৃষ্টি।।

এখনও কি ভাবনা জাগে
তেমনি নিবিড় ছোঁয়া
মন আকাশে রংধনু রং
ইচ্ছে বৃষ্টি ধোয়া
পড়লে চোখে দুচোখ আবার
ফেরাবে কি দৃষ্টি।।

শেখ জলিল   ২৮.০৭.২০১২

Sunday, July 22, 2012

শুধু তোমারই আশায়

শুধু তোমারই আশায়
দূর বনে নীলিমায় ডুবে যাবে চাঁদ
আকাশের তারাগুলো একে একে পড়বে খসে
আঁধারে হারিয়ে যাবে স্বপ্নীল পৃথিবী
তবুও হবে না শেষ তোমারই প্রতীক্ষা
ঘুমহীন চোখে এই রাতের বাসর।।

কবে যে করেছে চলা শুরু হৃদয়ের নদী
ঝিরিঝিরি ঝরনাধারা অন্তরে অবিরল
মনবনে ফুটেছে গোলাপ-চম্পা-বেলী
হাসনাহেনার ঘ্রাণে মাতাল ভ্রমরকূল
উড়ে উড়ে চলে গেছে তোমারই আকাশে
মানেনি বাধার ওই মেঘের চাদর।।

হয়তো তোমাকে পাবো খুঁজে বিরহের শেষে
নয়তো কখনো নয় যাপিত জীবনে আর
ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাবে যে দু’চোখ আঁধারে মুদে
অনন্ত আশার টানে হৃদয় গভীরে প্রাণ
ছুটে যাবে কোনো এক অজানা গোপনে
ধুলিঝড়ে ঢেকে এই বুকের পাথর।।

কথা: শেখ জলিল

Friday, July 20, 2012

চাঁদের মেয়ে

চাঁদমুখ বরণ চাঁদের মেয়ে
পরেছো চাঁদের চুড়ি
আমার পৃথিবী আঁধারেতে ভাসে
যেন অমানিশাপুরী।
কেমনে দেবো অতলান্তিক পাড়ি
উথাল পাথাল সব ঢেউয়ের সারি
জ্যোৎস্নার আলোয় পথ খুঁজে দেবে
নেই সে উত্তরসূরী!।

দীঘল জ্যোৎস্নায় ভালোই ছিলাম
পূর্ণিমাতে নাও ভাসিয়েছিলাম
শুক্লপক্ষ শেষ হ'য়ে যাবে
বলেনিতো ঘুমপরী
কৃষ্ণপক্ষে হারিয়ে যায় ঐ
যেন চাঁদের অপ্সরী!।

কেমনে পাবো যে ঠিকানা তোমার
দু'চোখে আঁধার নূড়ি
চাঁদমুখ বরণ চাঁদের মেয়ে
সরাও চাঁদের বুড়ি।
সামনে বিশাল সব বাধার পাহাড়
সমুদ্র নিক্ না  আড়ি
চাঁদ সওদাগর তুলেছে এই পাল
দেবেই সে পথ পাড়ি!।

কথা: শেখ জলিল

Tuesday, July 17, 2012

ঘোলের স্বাদে মেটে নারে

ঘোলের স্বাদে মেটে নারে
খাঁটি দুধের আশ
বাঁশবাগানে ফোটে না ফুল
বছর-বারো মাস
আমি কেমন করে মিটাই জ্বালা
প্রেমের হা-হুতাশ।।

কানায় যেমন দেখে নারে
রূপের ছবি রং
বেঘোর মাতাল বোঝে নারে
নাচের মুদ্রা ঢং
ও হায় নিঠুর কালা শোনে নাতো
বুকের দীর্ঘশ্বাস।।

বয়স কালে থাকে নারে
মাথা কালো চুল
চৈত্র মাসে ভরে নারে
শুকনা নদীর কূল
ও হায় চাড়াল-সাধু করে নাতো
এক ঘরেতে বাস।।

শেখ জলিল         ১৭.০৭.২০১২


Saturday, July 14, 2012

মানুষ চিনতে কষ্ট হয় খুব

গায়ক পাখিরা আছে এ পৃথিবীর সর্বত্র
যেখানেই যাই ভোরবেলা ঘুম ভেঙে গেলে
বিছানায় শুয়েও শুনি তাদের কলগান, কিচিরমিচির।
যেমন মানুষ আছে এ বিশ্বের আনাচে কানাচে
আছে হাসি-কান্না, মান-অভিমান, বিরহ ও প্রেম
পাখিদেরও আছে মুক্ত ডানা উড়বার অভিজ্ঞান
বনে ও বাদাড়ে, ঝোপে-ঝাড়ে, গাছে গাছে গান।

ধরিত্রীরও আছে কমনীয় রূপ সব খানে
সবুজে-শ্যামলে, পাহাড়ে-পর্বতে, মরুতে-সাগরে
সর্বত্র রূপের ছড়াছড়ি ঋতুতে ঋতুতে, মাসের পর মাস
কখনও বৃষ্টি-বন্যা, কখনও শান্ত রূপ, কথনও ঝঞ্ঝা-প্রলয়
প্রকৃতির কোল জুড়ে আসে শীত, বসন্ত বা গ্রীষ্মের বাহার।

যেখানেই যাই চিনি ফুল-পাখি, সুফলা প্রকৃতি
গ্রীষ্মের খরা, শীতের হিম কিংবা বসন্তের রং
চিনতে কষ্ট হয় না ধরণীকে বছরের পর অনেক বছর
শুধু বদলে যায় মানুষ মেধা ও মননে, ভৌগলিক পরিবর্তনে
বদলে যায় গায়ের রং, জাতি কিংবা ধর্ম রাষ্ট্রের কারণে
বহুরূপী মানুষ চিনতে কষ্ট হয় খুব
কষ্ট হয় এই মনে প্রতিদিনে প্রতিক্ষণে।

শেখ জলিল                                     ১৩.০৭.২০১২




Wednesday, July 11, 2012

তুমি ছিলে কিশোরী

তুমি ছিলে কিশোরী- মনটা উড়ু
ডানপিটে আমি ছিনু- নাটের গুরু
ছিঁড়ে ফেলে বেড়াজাল
ভরা স্রোতে তুলে পাল
আমাদের ভেসে চলা হয়ে গেলো শুরু।।

রমনার বটতলা, বৈশাখী মেলা
চুপিসারে চলছিলো প্রেম প্রেম খেলা
অভিসারে দুজনারই বুক দুরু দুরু।।

তারপর লোকালয়ে যতো কানাকানি
ট্রাফিক তোমার বাবা হলো সাবধানী
স্টপ সিগনাল মেরে কুচকালো ভুরু।।

কেটে গেছে বহুদিন আর নেই দেখা
বেঁধেছো সুখের ঘর নাকি আছো একা
স্মৃতিরা তোমার আজো ছায়া দেবদারু।।

শেখ জলিল        ১০.০৭.২০১২