Saturday, October 18, 2014

কালো কোকিল

কালো কোকিল, বুনো কোকিল
খাইও গাছে দোল
পরাণ ভরে ঘ্রাণ শুঁকিও
মিষ্টি আমের বোল।।

কালো কোকিল, ভালো কোকিল
গাইও মধুর গান
পাতার ডগায় শিশির ছুঁয়ে
করলে সূর্যস্নান।।

কালো কোকিল, উড়ো কোকিল
যাও যদি খুব দূর
আইসো ফিরে ভৈরবীতে
বাজলে করুণ সুর।।

কালো কোকিল, প্রিয় কোকিল
ভুইলো না এই ধাম
জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝে এসো
খাইও কাঁঠাল-আম।।

কালো কোকিল, ভুলো কোকিল
একটি কথা দাও
এই অভাগীর হইও না পর
আমার মাথা খাও।।


শেখ জলিল     ১৮.১০.২০১৪




Monday, October 13, 2014

আমার লেখা গান(৫৫১-৫৮৫)

৫৫১.
যদি সন্ধান কইরা পাইতাম তারে
পরাইতাম বেড়ি
অন্তরজ্বালা পোড়ায় আজো
বিরহে তারই।।

ঝিনুক হয়ে লুকায়ে রয়
খোলসের ভিতর
সাগরতলে খুঁইজা মরি
সারা জীবনভর।
পাখি হয়ে যায় রে উড়ে
জঙ্গলের ভিতর
আপনবাসা চিনলো না সে
কইরা গেলো পর
আমি পাহাড়পর্বত ডিঙ্গাইয়া তার
পাই না ঘর ও বাড়ি।।

আশায় আশায় বুক বাইন্ধা রই
সাজায়ে বাসর
কেউ কি এনে দিতে পারো
তার আসার খবর।
জানে কি সে এখনো তার
অপেক্ষাতে ঘর
বুকের মধ্যে দুয়ার খোলা
প্রেমেরই আসর
আমি অষ্ট্রপ্রহর তারই আশায়
স্বপ্ন মিলন করি।।

০৭.০৪.২০০৫

  

৫৫২.
আমার দুই চোখে দুই নদীর জোয়ার
দিনরাত্রি বয়
দুঃখ ও সুখ দুইয়ে মিলে
জীবন করে ক্ষয়।।

সুখ আসিলেও সয় না আমার
দুঃখ আসে ফিরে
কষ্টেরই ঢেউ দু'কূল ভাঙে
হৃদয় নদীর তীরে
তাই ঝড় আসিলেও মনে আমার
নেইতো কোনো ভয়।।

দুখ আসিলেও আশা জাগে
সুখ যে পাবো ফিরে
সোনার খাঁচায় রাখবো ধরে
অচিন পাখিটিরে
সেই পাখি আমার যায় রে উড়ে
পোষ মানানোর নয়।।

সেপ্টেম্বর, ২০০৫



৫৫৩.
আমি এই শহরের সব ঘরে ঘরে
আগুন জ্বালিয়ে দেবো
আমার প্রেমের অপমানের
প্রতিশোধ নেবোই নেবো
আমি মানবো না পরাজয়
মনে নেইতো কোনো ভয়।।

ভেবো না তুমি হবো দেবদাস
নিজেকে করবো ধ্বংস
তোমার প্রেমিক পুরুষদের সব
করে দেবো নির্বংশ
আমাকে হারানো সহজ নয়
জানি আমারই হবে জয়।।

ভেবো না তুমি বিরহে তোমার
বুকে পাথর চেপে রাখবো
তোমার পাপের পরিনতি না দেখে
আঁধারে দু’চোখ ঢাকবো
সেদিন আসবে নিশ্চয়
যেদিন আমারই হবে জয়।।

সেপ্টেম্বর, ২০০৫




৫৫৪.
আমার ঘর ভাঙ্গিয়া গেলো যারা
আরও সুখে আছে তারা
করছে অনাচার-
কোথায় গেলে পাবো দয়াল
তোমার সুবিচার।।

পাপ করিলে সাজা হবে
তাদের বিচার হবেই ভবে
এইতো জানি রীতি-
তবু কেন তারাই ভালো
সুখের ঘরে জ্বালায় আলো
সাজায় প্রেম-পীরিতি
বিচার যদি করবে তাদের
দাও না সমন তার।।

বন পুড়ে যায় আগুন লেগে
মন পুড়ে যায় ঘর ভাঙিলে
হয় যে বিরাট ক্ষতি-
তবু কেন দুঃখী যারা
আরও দুঃখে থাকে তারা
কষ্ট বাড়ে অতি
তুষের আগুন জ্বলছে বুকে
সয় না দেরী আর।।

সেপ্টেম্বর, ২০০৫




৫৫৫.
এখন আর মনে পড়ে না-
দেখলে তোমার হাসি
বাজতো হৃদয়ে বাঁশি
সেই কথা সেই গান
সুর ঝরে না।।

কাশবন ঘেরা সেই
বালু রাশি রাশি
গড়েছিলো বুকে প্রেম
ভালোবাসাবাসি
এই বুকে সেই প্রেম
ভর করে না।।

এসেছিলে তুমি এক
ফোটা ফুল হয়ে
হাতে হাত রেখেছিলে
খুশী আর ভয়ে
এই হাতে সেই ছোঁয়া
আর পড়ে না।।

অক্টোবর, ২০০৫


  
৫৫৬.
তোমার চোখের মাঝে আছে
বাধ ভাঙা এক নদী
আমি সেই নদীতেই ভেসে যাবো
মরণ আসে যদি।।

তুমি কি জানো না সেই নদী তীরে
হেঁটেছি কৈশোরে
হৃদয়ে আমার জমে আছে প্রেম
বুকেরই গভীরে
আজ কেমন করে ভুলবো বলো
এমন সুখের স্মৃতি।।

তুিম কি জানো না কতো পথ হেঁটে
এসেছি যৌবনে
লাগবে হাওয়া হৃদয়ে আমার
তোমারই কারণে
তাই জীবনে আমার দাও না তুমি
নতুন চলার গতি।।

অক্টোবর, ২০০৫



৫৫৭.
এই রাত কী আর ভোর হবে বলো-
আপন করেছি যারে, সেইতো গিয়েছে সরে
এ জীবন করে এলোমেলো।।

একা একা বসে কাটে রাতেরও প্রহর
এই মন করে শুধু বিরহে বিভোর
আসে না মনে কোনো গানেরও বাণী
তার ছেঁড়া বীণা কী বাজে আর বলো।।

এ জীবনে যতো কিছু সকলই তাহার
রাখিনিতো জমা করে তার কিছু আর
পড়ে না মনে কী একটু স্মৃতি
ঐ মনে পড়েছে ছায়া কার বলো।।

অক্টোবর, ২০০৫




৫৫৮.
ভালোবেসে এতো জ্বালা গো
পোড়ায় দেহ-মন
তুষের আগুন বুকে জ্বলে
আর কান্দে দুই নয়ন।।

বন্ধুয়া রে, ঘর ছাড়া করিলি আমায়
কাইড়া নিলি মন
তবু যে তুই হইলি নারে
আর আমারই আপন
তোর বিচেছদে অবুঝ এ মন
(আরতো) সয় না জ্বালাতন।।

বন্ধুয়া রে, সব লোকে যে কলংক দেয়
বলে সর্বক্ষণ
তুই নাকি ছিলি না আমার
প্রেম-পীরিতের বন্ধন
পাইতাম যদি তোরেই কাছে
(হইতো) কলংক লেপন।।

অক্টোবর, ২০০৫




৫৫৯.
আমি তোমাকে নিয়ে লিখতে পারি
হাজার একটি কবিতা
তোমাকে ভেবে গড়তে পারি
মনের কোঠরে ভাবি যা
আমি তোমাকে নিয়ে লিখতে পারি
একটি বড় উপন্যাস
তোমাকে ভেবে উড়তে পারি
হয়ে স্বপ্নের বুনোহাঁস
তুমি জীবনের মধুমাস
তুমি বুকের গভীরে বিশ্বাস।।

আমি তোমারই জন্য ডিঙাতে পারি
বিশাল পর্বতমালা
তোমারই জন্য পেরুতে পারি
ধূ ধূ বালুকাবেলা
শুধু তোমার কারণেই ফিরে ফিরে পাই
বেঁচে থাকার আশ্বাস।।

আমি তোমারই জন্য করেছি দেখো
জীবনটা পরিপাটি
তোমারই জন্য গড়েছি কতো
প্রেমেরই বসতবাটি
শুধু তোমার কারণেই ফিরে ফিরে পাই
বুকভরা নিশ্বাস।।

অক্টোবর, ২০০৫



৫৬০.
আজ অনেক দিনের পরে পেলাম
ভালোবাসার ক্ষণ
আমি তোমার মনে রাখবো বেঁধে
আমারই এ মন
তুমি রূপে অনন্যা আমার
তুমি প্রেমেরই বন্যা আমার।।

আমি পৃথিবী ঘুরে পাইনি আজও
তোমার মতোন নারী
তাই তোমার কাছেই থাকবো আমি
জীবন দেবো পাড়ি
তুমি ফুলেরই গন্ধ আমার
তুমি খুলেছো বন্ধ দুয়ার।।

আমি হৃদয় মাঝে রেখেছি পুষে
এতোদিন ধরে যারে
সেই তুমিই বুঝি স্বপ্ন আমার
পেয়েছি খুঁজে তারে
তুমি হৃদযে কল্প আমার
তুমি জীবনে গল্প আমার।।

অক্টোবর, ২০০৫



৫৬১.
আমি কার কাছে আজ যাবো বলো
যাবো যে নারীর কাছে, তার কী ভরসা আছে
কেউতো জানে না নারীর মনের খবর
আমি একা কী করে জানবো বলো।।

যাবো যে প্রেমের কাছে, তার কী আর মূল্য আছে
কেউতো জানে না প্রেমের দামের খবর
আমি একা কী দামে কিনবো বলো।।

যাবো যে ঘরের কাছে, তার কী ঠিকানা আছে
কেউতো জানে না ঘরের আসল খবর
আমি একা কী ভাবে শুনবো বলো।।

নভেম্বর, ২০০৫



৫৬২.
আমার এক জীবনে এতো জ্বালা
কেমনে বলো সয়
সবার মতোন আমিও মানুষ
মনটা পাথর নয়।।

প্রেম কপালে সয় না আমার
বাড়ায় যে বিরহ
মনটা আমার চায় যে কী তা
বুঝলো নাতো কেহ
হায়, ভালোবাসার হৃদয় আমার
করছে শুধু ক্ষয়।।

দুঃখ আমার চির সাথী
সুখ থাকে না ঘরে
সুজন আমার পর হয়ে যায়
কান্না চোখে ঝরে
হায়, পর কখনো হয় না আপন
সব লোকে যে কয়।।

নভেম্বর, ২০০৫



৫৬৩.
আমি থাকবো না ঐ শ্যামল ছায়ায়
সবুজ গাঁয়ের বাঁকে
থাকবো না ঐ ভালোবাসায়
প্রেম দিয়েছি যাকে
আমি থাকবো না থাকবো না এই পৃথিবী বুকে
থাকবো না থাকবো না সুখে অসুখে।।

আমি থাকবো না ঐ দৃষ্টিসীমায়
যতোদূর চোখ দেখে
থাকবো না ঐ মেঘের ভেলায়
সাজানো রং মেখে
আমি থাকবো না থাকবো না অনšত এই লোকে
থাকবো না থাকবো না রূপের ঝলকে।।

আমি থাকবো না ঐ প্রেমের ছোঁয়ায়
তোমার মধুর ডাকে
থাকবো না ঐ প্রাণের মায়ায়
জীবনের ঘুরপাকে
আমি থাকবো না থাকবো না হারিয়ে অলখে
থাকবো না থাকবো না চোখের পলকে।।

নভেম্বর ৮, ২০০৫




৫৬৪.
তোমার সাধের জীবন থেকে
যেদিন দিয়েছো বাদ
সেদিন থেকেই পেয়েছি আমি
বাঁচার নতুন স্বাদ
তোমাকে ধন্যবাদ, তোমাকে ধন্যবাদ
তোমাকে ধন্যবাদ।।

যতোই আমি তোমার প্রেমে
হয়েছি বেশি অন্ধ
ততোই তোমার মনের দুয়ার
করেছো আরও বন্ধ
আমি বুঝতে পারিনি তোমার প্রেমের
কঠিন জটিল ফাঁদ।।

যতোই আমি তোমার প্রতি
হয়েছি অনুরক্ত
ততোই তোমার মনের পাথর
করেছো আরও শক্ত
আমি বুঝতে পারিনি হৃদয়ে তোমার
অমন বিশাল খাদ।।

নভেম্বর ১০, ২০০৫




৫৬৫.
মোবাইলে মেসেজ পাবো
ই-মেইলে ই-কার্ড
রাত্রি জেগে বসে থাকি
হয়ে ভীষণ টায়ার্ড
বন্ধু মন মানে না তাড়াতাড়ি
দাও না প্রেমের এলার্ট।।

বসেই থাকি ক¤িপউটারে
করবো চ্যাটিং ম্যাসেঞ্জারে
ভয়েস কলে বলবো কথা
গভীর হলে যে রাত।।

যেদিন দেখি ওয়েব ক্যামে
মনটা থাকে খুশীর জ্যামে
ঘুম আসে না সেদিন রাতে
ফোটে নতুন প্রভাত।।

নভেম্বর ১০, ২০০৫




৫৬৬.
যখন বলো ভালোবাসি
মুখটি নেড়ে ঠোঁটে
বুকের বাগান জেগে ওঠে
ফুল যে হাজার ফোটে
তুমি আমার সুখের মিলন
জীবন নদীর তটে।।

যখন গানে সুরটি ধরো
পাখি ডাকে কুহু
ভোরের বাতাস বুকের ভেতর
বহে মুহুর্মুহু
পূবের আকাশ হয় যে রঙিন
সূর্য হেসে ওঠে।।

যখন হেসে গল্প করো
পূর্ণিমা চাঁদ হাসে
চোখের কোণে ছড়ায় আলো
স্বপ্ন ভেসে আসে
রাতের ছায়ায় ঘুমের পরী
পাখনা মেলে ছোটে।।

নভেম্বর ১২, ২০০৫



৫৬৭.
আমার দু'চোখ বন্ধ করে
যার ছবিটি দেখি
পাবো কী সেই অনন্যাকে
আসবে কাছে সে কি?।

আমি হাজার কথার সুর পেয়েছি
তারই গানের মাঝে
কথার ফুলে মালা গাঁথি
সকাল-দুপুর-সাঁঝে
তাই তারেই নিয়ে আমার মনের
যতো লেখালেখি।।

আমি হাজার বছর পথ হেঁটেছি
আজও বেঁচে আছি
সাত সমুদ্র পাড়ি দিয়েও
ফিরে ফিরে আসি
আজ তারেই কাছে পাবো বলে
করি ডাকাডাকি।।

নভেম্বর ১৩, ২০০৫




৫৬৮.
ভালোবাসার ভাবনাগুলো
বড়োই এলোমেলো
কেমন করে মনের মাঝে
সাজাই তারে বলো!।

এক চিঠিতে হয় না লেখা
হাজার কথা মনের
একটি সুরে যায় না সাধা
হাজারও সুর গানের
কেমন করে পাঠাই বলো
মনের কথাগুলো।।

এক দেখাতে হয় না দেখা
আসল দেখা তোমায়
এক মিলনে মন ভরে না
উদাস করে আমায়
কেমন করে মিটাই বলো
পাবার আশাগুলো।।

নভেম্বর ১৩, ২০০৫




৫৬৯.
বুকের কষ্ট বুকেই থাকে
জীবন করে নষ্ট
বিধিরে তোর ভবের খেলায়
একী অনাসৃষ্ট।।

কী-ই বা আছে আমার কাছে
দিয়েছি যা দেবার আছে
তবু কেন ঘুরছে তারা
আমার পিছে পিছে
কী চায় তারা বলে নাতো
করে আরও ¯পষ্ট।।

কেমন করে বাঁচি বলো
জীবন হলো এলোমেলো
কষ্ট পাথর বুকের উপর
সবাই চেপে গেলো
আঘাত দিয়ে বাঁধে দেখো
আমার আষ্টপৃষ্ঠ।।

নভেম্বর ১৩, ২০০৫




৫৭০.
এখনও মনে জাগে ভয়
তোমাকে আমাকে নিয়ে
কী জানি কী হয়-
পাবো কী তোমায় কাছে
যতোটা জীবন বাঁচে
থাকবে আমারই হয়ে
ততোটা সময়।।

সারাটা সময় শুধু
তোমাকে ভাবি
একটাই চাওয়া মনে
প্রাণের দাবী
দু’জনে বাসর ঘরে
রাত দেবো ভোর করে
চোখে চোখে হবে কথা
হবে পরিণয়।।

এ মনে আমার কতো
জমেছে আশা
তোমাকেই নিযে আমি
বাঁধবো বাসা
মনেরই মতোন করে
সাজিয়ে রাখবো তারে
প্রেমেরই যতোনা ছবি
চোখে জেগে রয়।।

নভেম্বর ১৪, ২০০৫



৫৭১.
যখন প্রেম করে কেউ ঘরের পাগল
পাগলামী তার শোভা পায়
যখন ঘর ভেঙে কেউ পালিয়ে যায়
প্রেম বলো তার যায় কোথায়?।

যখন মদ খেয়ে কেউ নেশার পাগল
মাতলামী তার শোভা পায়
যখন রূপের নেশায় কেউ মাতাল হয়
তার নেশাটা যায় কোথায়?।

যখন কথার জালে কথার পাগল
ওয়াদা তার শোভা পায়
যখন কথা দিয়ে কেউ হারিয়ে যায়
তার ওয়াদা যায় কোথায়?।

নভেম্বর ১৪, ২০০৫




৫৭২.
উপন্যাসের পাতায় পাতায়
যে কাহিনীর জন্মদায়ী তুমি
সেই কাহিনীর ভুলের মাশুল
গুণছি এখন আমি
জানি, ভুলের কিছুই ছোঁয়নি তোমায়
হয়নি কোনো ক্ষতি
মানতে হবে তবু তোমায়
ভুলের পরিনতি।।

সেই কাহিনীর শুরু ভালো
মাঝেও অনেক সুখের
জানতে তুমি পারোনি শেষ
সুখের নাকি দুখের
যখন, ক্ষমতাধর এক লেখক এসে
সেই কাহিনী লিখবে শেষে
টানবে তাতে যতি
মানতে হবে সেদিন তোমায়
শেষের পরিনতি।।

সেই জীবনের জন্যে যাদের
করেছো এখন ফেরার
পড়বে মনে তাদের স্মৃতি
বুকের বাঁধন ছেঁড়ার
যখন, মরণ এসে ডাকবে কাছে
কেউ রবে না তোমার পিছে
নিভবে চোখের জ্যোতি
মানতে হবে সেদিন তোমায়
পাপের পরিনতি।।

নভেম্বর ১৭, ২০০৫



৫৭৩.
কী আগুনে জ্বলি আমি
কী আগুনে জ্বলি
কেমন করে বোঝাই বলো
কারে আমি বলি।।

কেউ জানে না কেউ বোঝে না
জানি শুধু আমি
আরও জানে সেই একজনা
যিনি অšতর্যামী
কী জীবনে বাঁচি আমি
কী জীবনে বাঁচি
কেমন করে বোঝাই বলো
কতো সুখে আছি।।

মন মানে না নেই স্বজনা
ভাবি যারে মনে
বাঁধবো আমি প্রেমের বাসর
কবে তারই সনে
কী স্বপনে জাগি আমি
কী স্বপনে জাগি
কেমন করে করবো বলো
স্বপন ভাগাভাগি।।

নভেম্বর ২৫, ২০০৫




৫৭৪.
এতো জ্বালা সয় না আমার
ছোট্ট বুকের ভিতর
জ্বালায় জ্বালায় পুড়ছে শুধু
এই পোড়া অšতর।।

ঘরেও জ্বালা বাইরে জ্বালা
সোনার অঙ্গ হইলো কালা
জ্বলেও যদি হইতো সোনা
প্রেমের পরশ পাথর।।

পাইতাম যদি তারেই কাছে
যার কাছে সেই পাথর আছে
বুকের খাঁচায় রাখতাম তারে
করতাম কতো আদর।।

নভেম্বর ২৬, ২০০৫




৫৭৫.
কেউ কী লিখে করতে পারে শেষ
মনের সকল কথা
লেখার মাঝেই শেষ হয়ে যায়
না-লেখার স্বার্থকতা।।

করতে পারে না কেউ
না-পারা পুরনো কাজ
অগোছালো রয়ে যায়
জীবনের সব কাজ
মরণের কাছে হার মেনে নেয়
জীবনের বা¯তবতা।।

গাইতে পারে না কেউ
না-গাওয়া গানেরই সুর
চেনা সুর হয়ে যায়
অচেনা ও বহুদূর
স্মরণে এনেও যায় না বলা
সাজানো স্মৃতির কথা।।

নভেম্বর ২৭, ২০০৫




৫৭৬.
ভালোবাসি বলে যারা
এই আমাকে করে অপমান
জানি ঈর্ষায় মরে তারা
বোঝে নাতো ভালোবাসার সম্মান।।

চর দখলের মতো
পেতে চায় অবিরত
অন্য মানুষের হৃদয়।
মন দিয়ে মন নেয়া
বোঝে নাতো চাওয়া-পাওয়া
ভালোবাসাবাসি কারে কয়
শুধু আঁধারেই থাকে তারা
পাওয়ারই নেশায় যারা
মানে নাতো কারো প্রতিদান।।

প্রেম করে লোকে কতো
গড়ে গেছে শত শত
লক্ষ হৃদয়ের মহল।
সাজাহান মরে গেছে
তবুও তো বেঁচে আছে
রূপের ওই তাজমহল
জানি হিংসাতে গড়ে যারা
পারবে না দিতে তারা
এতোটুকু প্রেমে অবদান।।

জানুয়ারী ২১, ২০০৬





৫৭৭.
মনটা আমার কাড়িয়া
বন্ধু গেছে ছাড়িয়া
তাহার খোঁজে আইলাম বাসে
ঢাকার ফুলবাড়িয়া।।

শুনছিলাম সে ঢাকায় থাকে
গুলি¯তানের মোড়ের বাঁকে
বন্ধু আমার কাপড় বেচে
এদিক-ওদিক ঘুরিয়া।।

হকার ভাইদের জিগাই যতো
দেখছেনি কেউ বন্ধুর মতো
চিনলো না কেউ বন্ধুয়ারে
অনেক স্মরণ করিয়া।।

একলা একা আইছি ঢাকা
বুকটা আমার রইলো ফাঁকা
বন্ধু ছাড়া এই শহরে
যাবো যে হায় মরিয়া।।

পাইতাম যদি তারেই কাছে
বলিতাম যা বলার আছে
দেখাইতাম প্রেমের কষ্ট
বুকটা আমার চিরিয়া।।

জানুয়ারী ২৩, ২০০৬






৫৭৮.
এমন জীবন কেন দিলা বিধি-
লাভ-ক্ষতির এ হিসাব কষে
আসলো ফিরে অবশেষে
দুঃখ নিরবধি।।

ভালো আমি বাসি যারে
সেইতো আমায় বোঝে নারে
আমায় ছেড়ে রয় যে দূরে
শুধুই করে ক্ষতি।।

এসেছিলাম ভবে একা
শুক-সারির না পেলাম দেখা
সকল ছেড়ে যেতে হবে
মরণ আসে যদি।।

এপ্রিল ০১, ২০০৬




৫৭৯.
যদি বলো দায়ভার-
যাবো না ডিঙাতে ওই পাহাড়ের চূড়া!
যদি বলো ভালোবাসা-
নিঃশ্বাস-বিশ্বাসে দেবো হৃদয়টা পুরা।।


যদি বলো নিয়ম বাঁধন-
হবে না হবে না প্রেম ভজন সাধন।
উড়ো পাখি হবো-
অসীম সুনীলে দেবো একদিন ওড়া।।

যদি বলো তুমিই আপন-
দেবো যে দেবো যে খুলে মনের গোপন।
শুধু পাশে রবো-
তোমার বাঁধনে দেবো একদিন ধরা।

১৫.০৯.২০০৬




৫৮০.
কান্দেরে কান্দেরে চোখ
কীসের লাগিয়া
উথাল পাথাল করে মন
অন্তর ছাপিয়া।।

কার লাগিয়া জোয়ার আসে
সাগর কিনারে
এই আমি কি ভাসতে পারি
অকুল পাথারে?
কার লাগিয়া বুকের ধারা
উঠছে ফাঁপিয়া।।

কার লাগিয়া উদাস আমি
পারের ঘাটাতে
পথহারা হই বারেবারে
ঢেউয়ের আঘাতে
কার লাগিয়া পরান খাঁচা
উঠছে কাঁপিয়া।।

১১.১০.২০০৬




৫৮১.
এই সেই মাটি, এই সেই দেশ
মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ
দেখেছি যে স্বপ্ন একাত্তরে
গড়বো সে ভিত্তি শক্ত করে
মিলিত প্রাণের আয়োজনে
শত কোটি প্রেমের বন্ধনে।।

(দেখো) তিন যুগ গেছে আরো যায় যুগ
শত কোটি প্রাণ আজ হয়ে উন্মুখ
(চায়) শান্তি ও সুখের বিশালতা
একুশ শতকের নব বারতা
গড়বো সবই তা প্রয়োজনে
শত কোটি প্রেমের বন্ধনে।।

(দেখো) শহর আর গ্রামে আজ কতো বিভেদ
ঘুচাতে হবে সেই শত ভেদাভেদ
(সেই) মাটি ও মানুষের কাছে গিয়ে
হাতে হাত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে
চলছে অঙ্গীকার উন্নয়নে
শত কোটি প্রেমের বন্ধনে।।

১৫.০৯.২০০৭





৫৮২.
একদিন মিশে যাবো পথের ধূলায়-
যে পথে হাঁটতে তুমি খোলা দুটি পায়ে
সে মাটিতে মিশে রবো গোধূলি বেলায়
শুধু তোমার প্রেমের টানে নিবিড় মায়ায়।।

উড়বে পথের ধূলো যদি তুমি চলো
জড়াবো তোমার গায়ে হয়ে এলোমেলো
ওই খোলা হাত, পা, মুখ ও ঠোঁটে
আমি ছড়াবো প্রেমের কণা আলতো ছোঁয়ায়।।

মুছবে যখন মুখ ঘরে ফিরে যেয়ে
দেখবে যখন রূপ ঐ আর্শিতে চেয়ে
হাসবো তখন আমি খুব মিষ্টি করে
সেই ভালোবাসা গড়ে দেবো ধুলোর চুমায়।।

১৯.০৯.২০০৭




৫৮৩.
লিখবো না লিখবো না করেও শেষে
লিখছি  প্রিয় সেই নাম
ভরবো না ভরবো না করেও আজও
ভরছি শত নীল খাম।।

অথই সাগর, নদ-নদী, মহাদেশ
ঘুরছি কতো না পাহাড়ের পাদদেশ
চরাই-উৎড়াই পেরিয়ে শুধু
খুঁজছি তোমারই ধাম।।

হাজার প্রহর রাত জেগে আমরণ
ভাবছি কতো না অনাবিল মধুক্ষণ
কাব্য-কথায় দিচ্ছি আজও
অমূল্য হৃদয়ের দাম।।

২৪.০৯.২০০৭




৫৮৪.
এইসব এলোমেলো কবিতা লিখতে বসে কখনো কখনো ভাবি
আদৌ কি লিখেছি মনের আসল কথাটি অবলীলায়?
যে আশা লুকিয়ে চোখের দৃষ্টিতে তরপায়
যে ইচ্ছে লুকিয়ে মনের গভীরে সাঁতরায়
কখনো কি লিখেছি তাদের ছিটেফোঁটা সাজিয়ে কথামালায়?

গ্রীষ্ম বয়ে যায় কতো পোড়ে না হৃদয়
বৃষ্টিতে ভেজে না মন এই আকুল বর্ষায়
নতুন উৎসবে হেমন্ত কতো না এলো
ফুটলো না ফুল তবু সতেজ এ আঙিনায় বসন্তবেলায়!?

যাচ্ছে এ জীবন কেটে যাবে দিন আরো
অপূর্ণ রবে না জানি জীবনের পোয়াবারো
সবার সান্নিধ্যে কাটবে বছর কতো
আসবে কি শেষ ঘুমটুকু না দেখে তোমায় বিদায়বেলায়!?

২৫.০৯.২০০৭



৫৮৫.
যখন ধলেশ্বরীর পাড় ধরে যাই হেঁটে
তোমার কথাটি পড়ে মনে
খেলেছিলাম কতোনা খেলা সেইদিনে
দূর নদীতীর কাশবনে।।

এখানে ছিলো যে বুড়ো বটগাছ
তার সুশীতল ছায়া আজ নেই
বৃষ্টিতে বর্ষণে ভিজে একাকার
কতোদিন দাঁড়িয়েছি দুজনেই-
ভালোবাসা মিশেছিলো বটের আড়ালে
কতো উষ্ণ-শীতল চুম্বনে।।


এখনো রয়েছে স্মৃতি অমলিন
তোমার আমার প্রথম কথার
লজ্জাবতী সেই ডাগর দুচোখ
ডেকেছিলো এক স্বপন দেখার
প্রাণে আশা জেগেছিলো দু'জনার
ভালোলাগা নিবিড় স্পন্দনে।।

২৩.১০.২০০৭


Wednesday, October 8, 2014

ধর্মহীনে খোঁজে ছুতা- ধর্মের ষাড় মারে গুতা

সকল ধর্মহীনে খোঁজে ছুতা
ধর্মের ষাড় মারে গুতা
কোথায় বলো যাই
দেখি জগৎ জুড়ে মতের বিরোধ
মানবতায় নাই।।

জল নিয়ে করে হরি-হল্লা
পানিতে নেমে কয় মাশাল্লাহ
হিন্দু-মুসলমান
ডুবলে পরে মানবদেহ
সমানে সমান
ওরে ভেসে ভেসে যাবে ক্ষয়ে
খুঁজলে কী আর পাই।।

ব্রাহ্মণে চায় পূঁজার ধোঁয়া
মোল্লারা এসে দেয় ফতোয়া
গরিব-চণ্ডালে
মরলে কী জাত লেখা থাকে
কারও কপালে
ওরে পচে গলে যায় রে দেহ
রূপের রোশনাই।।

কে বড়ো আর কেবা ছোটো
জন্মিলে সব ধূলায় হাঁটো
মাটির এ ধরায়
জলিল বলে সকল ভালো
মানব তপস্যায়
ওরে উঁচু বলো নিচু বলো
মরণ হবে ঠাঁই।।

শেখ জলিল ১০.১০.২০১৪